চট্টগ্রাম নগরীর যানজট ও দুর্ঘটনা নিরসন

166
মু. মুজিবুর রহমান, চট্টগ্রাম রিপোর্টার। আইডি নম্বর: ৯৫০।
চট্টগ্রাম নগরীর ব্যস্ত সড়কগুলোর মধ্য দিয়ে নেওয়া হয়েছে ওয়াসার পাইপলাইন, গ্যাসলাইন, বৈদ্যুতিক লাইন ও ড্রেন বা নালার পানি চলাচল পথ। গাড়ি চলার পথে রাস্তার মাঝখানে দেখা যায় হঠাৎ কিছুঅংশ ভাঙ্গা রাস্তা কিংবা কাজ চলছে। এতে অনেকসময় চালক তার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে ফলে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। ২০১৯ সালে সারাদেশে ৪৭০২ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৫২২৭ জনের। এভাবে প্রতিবছর দেশব্যাপী হাজার হাজার মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সড়ক সম্প্রসারণ, মেরামত কিংবা নতুন সড়ক তৈরি করার সময় মূল সড়কের পাশে ওয়াসা, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের জন্য আলাদাভাবে একটি লাইন তৈরি করলে অনেক সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। প্রায় দেখা যায় সড়ক মেরামত করার সপ্তাহ দুই-এক যেতে না যেতেই ওয়াসা লাইনের সমস্যা দেখা যায়, ওয়াসার পাইপলাইন ফেটে গিয়ে রাস্তায় পানির বন্যা বয়ে যায়। পরে ওয়াসা কর্তৃপক্ষ থেকে লোকজন এসে রাস্তা খুঁড়ে পাইপলাইন ঠিক করে দিয়ে যায় ঠিকই কিন্তু রাস্তার বেহাল দশা কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে না। দুর্ভোগ পোহাতে হয় গাড়ি চালক ও যাত্রী তথা জনগণকে। অথচ বাংলাদেশে এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় গড়ে ৬০ কোটি টাকা। পুরো পিচ ডালাই রাস্তা ভালো মাঝপথে হঠাৎ রাস্তার একটি অংশ ভাঙ্গা হলে দূর থেকে গাড়ি চালকদের নজরে পড়ে না যার ফলে অনেক দুর্ঘটনা ঘটে এবং সেই ভাঙ্গা অংশে মালবাহী ট্রাক বা অন্যান্য গাড়ির ঝাঁকুনি খেতে খেতে পুরো সড়ক নষ্ট হয়ে যায়। কালুরঘাট-বহদ্দারহাট সড়কে কালুরঘাট থেকে আসার পথে সিএনবি পার হয়ে রাস্তার মাঝপথে দুই-তিনটি বড় অংশ ভাঙ্গা এখনো বিদ্যমান। অক্সিজেন থেকে ২ নম্বর গেইট আসার পথে বায়েজিদের আগে দুই-একটি ভাঙ্গা রয়েছে। অক্সিজেন থেকে মুরাদপুর আসার পথে বেশিরভাগ অংশ ভাঙ্গা এবং কিছুঅংশ পিচ ডালাই কিছুঅংশ ইটের যার ফলে যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারে না এতে করে যানজট সৃষ্টি হয়। যানজটের কারণে নষ্ট হচ্ছে কর্মজীবী মানুষের লক্ষ লক্ষ কর্মঘণ্টা। কর্মঘণ্টা নষ্ট হওয়া মানে দেশের উৎপাদন, উন্নয়ন, অগ্রগতি, অগ্রযাত্রা ব্যাহত হওয়া। এতে করে প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে দেশ বা রাষ্ট্র ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। নগরের প্রায় সব রাস্তায় চলে খোঁড়াখুঁড়ি। যানচলাচল বিঘ্নিত হয়। ধুলোবালিতে ঢেকে যায় সড়ক। নগরের সড়কগুলোর ব্যাপক খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে নগরবাসী। ওয়াসার পাইপলাইন স্থাপন, মেরামতের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির কারণে যানচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। বাতাসেও উড়ছে ধুলোবালি। ধুলোবালি নাকে ঢুকলে হতে পারে ডাস্ট অ্যালার্জি। সওজ, ওয়াসা, গ্যাস, ওয়াপদা এদের মধ্যে কম্বিনেশন থাকলে রাষ্ট্রীয় অনেক টাকা বাঁচানো যায়, উন্নয়নের অগ্রযাত্রা সচল রাখা যায়। ওয়াসা, গ্যাস ও ওয়াপদার জন্য আলাদা লেইন তৈরি করে টেকসই পাইপলাইন, গ্যাসলাইন, বৈদ্যুতিক লাইন স্থাপন করা গেলে একটি দীর্ঘস্থায়ী সমাধান পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়। বেঁচে যাবে হাজারও মানুষের প্রাণ, বেঁচে যাবে লক্ষ কর্মঘণ্টা। দূর হবে ভোগান্তি, দূর হবে সময়মতো অফিসে পৌঁছানোর দুশ্চিন্তা। এতে করে লাভবান হবে রাষ্ট্র, লাভবান হবে জনগণ।