রেল কি রাষ্ট্রের ভিতরে নাকি আলাদা রাষ্ট্র? প্রশ্ন সুজনের
![](https://www.bdunionnews.com/wp-content/uploads/2021/08/231680774_847590999216788_790391328378742713_n.jpg)
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি আব্দুর রহিম:: রেল কি রাষ্ট্রের ভিতরে আলাদা রাষ্ট্র? মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক অনুমোদিত গেজেটকে যারা পদদলিত করতে চায় তারা কি রাষ্ট্রের ভিতর আলাদা রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়? এ প্রশ্ন রেখেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। আজ মঙ্গলবার (৩ আগস্ট ২০২১ইং) বেলা ৩টায় তার নিজ বাসভবনে নাগরিক উদ্যোগের এক জরুরি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ প্রশ্ন উত্থাপন করেন।
এসময় তিনি বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় সিডিএ চট্টগ্রামে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। তাছাড়া সিডিএকে চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়িত্ব অর্পন করা হয়েছে। ঠিক তেমনি চট্টগ্রাম ওয়াসাকেও নগরবাসীর মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে। কিন্তু কি কারণে সরকারী প্রতিষ্টান হয়েও রেলওয়ে কাউকে তোয়াক্কা না করে অনেকটা গোয়ার্তুমি করে সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সে প্রশ্ন রয়েই যায়। অনুমোদন বিহীন কাজের জন্য রেলওয়ে লজ্জ্বিত হওয়ার পরিবর্তে ধরাকে সরা জ্ঞান করছে। আর রেলের কর্মকর্তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসেবে রাষ্ট্রের নীতি ও আদর্শ মেনে চলার কথা থাকলেও তারা যেন কোন কিছুই মানছে না।
সিআরবি বিষয়ে তারা রাষ্ট্রকে সম্পূর্ণভাবে ব্ল্যাকমেইল করেছে। সিডিএর ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান এবং চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যানকে পরিপূর্ণ অন্ধকারে রেখে তারা টেন্ডার এবং অন্যান্য প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে যা রীতিমতো বিস্ময়কর। আমাদের এখন একথা বিশ্বাস করতে বাকী নেই যে রেলের অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা সরকার বিরোধী প্রেতাত্মারা পরিকল্পিতভাবে একটি ইস্যু সৃষ্টি করে সরকারকে জনগনের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে উঠে পড়ে লেগেছে। সাংবিধানিক কাঠামোকে উপেক্ষা করে পরিকল্পিতভাবে বিশৃংখলা সৃষ্টির অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে তারা। রেল কি তাহলে রাষ্ট্রের চেয়েও শক্তিশালী? গ্রীণ হেরিটেজের অংশকে গোপন রেখে যারা পিপিপি পাশ করিয়েছে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনার দাবীও সুজনের।
তিনি আরো বলেন আমরা রেলকে অনুরোধ জানাবো পিপিপির আওতায় দেশে নতুন নতুন রেললাইন স্থাপন করুক, রেললাইন ভিত্তিক ট্যুরিজম প্রতিষ্ঠা করুক, রেলকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের বিশ্বস্ত বাহন হিসেবে গড়ে তুলুক। আভ্যন্তরীন দূর্নীতি বন্ধ করে রেলকে লাভজনক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সরকারের উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে পরিণত করুক। কিন্তু না, তারা সেদিকে মনযোগ না দিয়ে জনগনের অধিগ্রহণকৃত জায়গা জমি বিক্রয়ের মহোৎসবে নেমেছে। শুধুমাত্র পাহাড়তলী, পার্বতীপূর এবং সৈয়দপুর ওয়ার্কশপের সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারলে বিদেশ থেকে কোন ইঞ্জিণ কিংবা বগি কিছুই আমদানি করতে হবে না। এতে দেশের বিপুল পরিমান অর্থেরও সাশ্রয় হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। তিনি সম্প্রতি সিআরবির ঘটনাবলী তদন্তে মহামান্য হাইকোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন গঠন করে প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করতে সরকারের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানান।
জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে নিজ এলাকার গরীব ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানো এবং কোভিড আক্রান্ত রোগীদের যথাসাধ্য সাহায্য করতে নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানান। তিনি করোনাকালীন সময়ে মেট্রোপলিটন পুলিশের সাহসী এবং মানবিক ভূমিকার জন্য প্রতিটি সদস্যকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে রোগী পরিবহন এবং অক্সিজেনের সরবরাহের কারণে সিএমপি মানবিক ইউনিট হিসেবে নগরবাসীর কাছে আস্থা অর্জন করেছে। পুলিশের অনেক সদস্য মৃত্যুবরণ এবং অসুস্থ হলেও তারা মানবিকতার কাজে কখনো পিছ পা হননি। তাদের এ ত্যাগ জাতি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে।
তিনি পুনরায় নগরবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মাস্ক পরিধান করাকে অভ্যাসে রূপান্তর করার অনুরোধ জানান। শুধুমাত্র সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহার এবং সামাজিক সংঘবদ্ধতা থেকে দূরে থাকতে পারলে লকডাউন না দিয়েও সংক্রমণ কমানো যাবে। এতে করে জীবন ও জীবিকা দুইটাই সমুন্নত রাখা সম্ভব হবে।
নাগরিক উদ্যোগের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী মো. ইলিয়াছের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব হাজী মো. হোসেন এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আব্দুর রহমান মিয়া, রুহুল আমিন তপন, সাইদুর রহমান চৌধুরী, আজম খাঁন, নুরুল কবির, মোরশেদ আলম, ডা. অঞ্জন কুমার দাশ, অধ্যক্ষ কামরুল হোসেন, শিশির কান্তি বল, মোঃ শাহজাহান, সোলেমান সুমন, মাহফুজ চৌধুরী, এইচ এম জোবায়ের প্রমূখ।