মসজিদের দানবাক্সে পৌনে ২ কোটি টাকা
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে পাওয়া গেলো কোটি টাকার পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রা ও সোনাদানা। আজ (শনিবার) সকালে মসজিদের ৮টি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্সগুলো খোলার পর টাকাগুলো প্রথমে ছোট-বড় ১২টি বস্তায় ভরা হয়। এরপর শুরু হয় টাকা গণনার কাজ। দিনব্যাপী গণনা শেষে দানের টাকার হিসাব পাওয়া যায় এক কোটি ৭৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭১ টাকা। এছাড়াও এক কেজির মতো স্বর্ণ ও রূপাসহ বেশ কিছু বৈদেশিক মুদ্রাও পাওয়া গেছে।
শহরের হারুয়া এলাকায় অবস্থিত ঐতিহাসিক এ মসজিদের দান বাক্স প্রতি তিন মাস পরপর খোলা হয়। তবে করোনার কারণে ছয়মাস পর শনিবার মসজিদের ৮টি লোহার দানবক্স খোলা হয়। দিনভর গগনা শেষে টাকার হিসেব দাঁড়ায় প্রায় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
টাকা গণনার সময় উপস্থিত ছিলেন-কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার মুর্শেদ চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আব্দুলাহ আল মাসউদ, পাগলা মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফজলে রাব্বি, মাহামুদুল হাসান, উবাইদুর রহমান সাহেল, পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. শওকত উদ্দীন ভূঞা ও রূপালী ব্যাংকের কিশোরগঞ্জ শাখার কর্মকর্তাসহ মসজিদ কমিটির অন্য সদস্যরা।
টাকা গণনার কাজ তদারকি করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফার তত্ত¡াবধানে প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে জমা রাখা হয়েছে। আর যে স্বর্ণালঙ্কার পাওয়া গেছে তা আগের স্বর্ণালঙ্কারের সঙ্গে যোগ করে দানের সিন্দুকে রেখে দেওয়া হয়েছে।
প্রায় আড়াইশ বছর পুরোনো এ সমজিদে দান করলে বেশি সওয়াব হয় এবং মানত করলে পূর্ণ হয় মনোবাসনা, এমন বিশ্বাস থেকে এখানে প্রতিনিয়ত নগদ টাকা, গহনা, বৈদেশিক মুদ্রা দান করে থাকেন নানা শ্রেণি-পেশা আর ধর্মের মানুষ। মসজিদ ও ইসলামী কমপ্লেক্সের খরচ চালিয়ে অবশিষ্ট টাকা জমা রাখা হয় ব্যাংকে। মসজিদের আয় থেকে জেলার বিভিন্ন মসজিদ-মাদরাসা ও এতিমখানার খরচ চলে বলেও জানান সংশ্লিষ্ট প্রশাসন।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৫ ফেব্র“য়ারি মসজিদের দানবাক্সগুলো খুলে গণনা করে ১ কোটি ৫০ লাখ ১৮ হাজার ৪৯৮ টাকা পাওয়া যায়।