টিকার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার চাইলেন অর্থমন্ত্রী
কোভিড-১৯ এর টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের তা প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে বিশ্ব ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা চেয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বৃহস্পতিবার বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফারের নেতৃত্বে সংস্থাটির প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সভায় এ সহায়তা চান তিনি।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি ২০২০ সালে বিশ্ব ব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভার অংশ হিসাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মু্স্তফা কামালের নেতৃত্বে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল ও বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট হার্টউইগ শেফারের নেতৃত্বে সংস্থার প্রতিনিধি দলের এই সভা হয়।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায় অনুযায়ী করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কারের সঙ্গে সঙ্গে দেশের সব জনগণের টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতে টিকা কেনা, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণের কাজের জন্য ৫০ কোটি ডলারের সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ করা হয়।
চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের আইডিএ-১৯ (সবচেয়ে কম সুদের ঋণ) এর আওতায় বরাদ্দকৃত অর্থের অতিরিক্ত হিসাবে এই সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
এ সময় কোভিড-১৯ মহামারীর অভিঘাত মেকাবিলায় বিশ্ব ব্যাংক ‘কোভিড-১৯ রিকভারি অ্যান্ড রেসপন্স’ প্রকল্পের জন্য যে ৫০ কোটি ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, সেখান থেকে চলতি অর্থবছরে জরুরি ভিত্তিতে ২৫ কোটি ডলার ছাড় করার অনুরোধও জানান অর্থমন্ত্রী।
সভায় অর্থমন্ত্রীর নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে অর্থ সচিব ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব আলোচনায় অংশ নেন। বিশ্ব ব্যাংকের পক্ষে হার্টউইগ শেফার ও আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি মিয়াং টেম্বন আলোচনায় অংশ নেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল
সভায় অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ টিকা কেনার জন্য ঋণ সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে জনসংখ্যার দিক দিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশের জন্য নায্যতার সঙ্গে দ্রুত ঋণ মঞ্জুরের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের জন্য হার্টউইগ শেফারের সহযোগিতা চান।অর্থমন্ত্রী কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবেলার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাংকের গৃহীত দ্রুত ও সময়োপযোগী বিভিন্ন উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
কোভিড-১৯ মোকাবেলায় দ্রুততার সঙ্গে বাংলাদেশকে ১০ কোটি ডলার ঋণ দেয় বিশ্ব ব্যাংক। সংস্থাটি টিকার জন্য অর্থ সহযোগিতার বিষয়টিও ইতিবাচকভাবে দেখার আশ্বাস দিয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মহামারীতে ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমবাজার, আর্থিক ও সামাজিক খাত সচল রাখতে বিশ্ব ব্যাংকের ‘প্রোগ্রামাটিক জবস ডেভেলপমেন্ট পলিসি ক্রেডিট (ডিপিসি)’ প্রকল্পের আওতায় তৃতীয় কিস্তির ২৫ কোটি ডলার বাজেট সহায়তার অর্থ দ্রুত ছাড় করতেও অনুরোধ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সভায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার ডিপিসি প্রকল্পের প্রয়োজনীয় শর্তাবলীর অধিকাংশই ইতোমধ্যে পূরণের বিষয়টি বিশ্ব ব্যাংক কর্মকর্তাদের অবহিত করেন। বাকি শর্তাগুলোও দ্রুত পূরণ করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, বিশ্ব ব্যাংকের আইডিএ ১৮তম প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশ ৫০০ কোটি ডলার এবং এসইউএফ থেকে আরও ২০০ কোটি ডলার ব্যয়ের সক্ষমতা দেখিয়েছে, যা আইডিএভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে সক্ষমতা দেখাতে পারায় আইডিএ-১৯ এর আওতায় বাংলাদেশকে বিগত বছরগুলোর তুলনায় বেশি পরিমাণে ঋণ বরাদ্দ দেওয়ার অনুরোধ জানান তিনি।